শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০১১

------------------------------------
ঠিক কতোটুকু দূরত্বে আছি জানিনা, কিন্তু মাঝে মাঝে এ দূরত্বটুকু ভালো লাগে।
কারেন্ট চলে গেলে অন্ধকারের মধ্যে হঠাৎ ল্যাম্পপোষ্টের আলো দেখলে যেরকম ভালো লাগে ঠিক সেরকম ভালো। মাঝে মাঝে ভাবি ল্যাম্পপোষ্ট হয়ে জন্মালে খারাপ হতোনা। সারাজীবন দাঁড়িয়ে থেকেই পার করে দিতাম।

চৌরাস্তার উচু ল্যাম্পপোষ্ট ছাড়িয়ে
নিঃশ্বাস নিয়ে একটু দাঁড়িয়ে,
চারিপাশে বিমূত রেখায়
আমি ভবঘুরে ঝড়,
তোমাদের খুব কাছে ছায়া হয়ে যাই
তোমাদের ভালোবাসা.....................

মাঝে মাঝে কিছু কথা বলতে খুব ইচ্ছে করে, কিন্তু বলার মতো মানুষ থাকেনা। তখন খুব অবাক লাগে, চারিপাশে এতো মানুষ অথচ আমি আমার কথাগুলো এদের কাউকে বলতে পারছিনা। কেন পারাছিনা সেটাও নিজের কাছে পরিস্কার হয়না। কেমন যেন ঝাপসা ঝাপসা লাগে। হয়তো একদিন এসময়টা চলে যাবে। আস্তে আস্তে সব কিছু পরিস্কার হতে শুরু করবে অথবা করবেনা...........তবুও এসব ভাবতে ভালো লাগে।
ইদানিং কেন যেন খুব ক্লান্ত লাগে, যেটাই দেখি সেটাতেই ক্লান্তি চলে আসে। তবুও ছোট ছোট স্বপ্নগুলোকে জোড়াতালি দিয়ে বড় করার চেষ্টা করি, একটা সময় নিজের কাছে নিজেই পরাজিত হই। শিতের দিনে শুকনো পাতায় পা দিলে পাতাগুলো যেমন মড়মড় করে ভেঙে যায়, স্বপ্নগুলো ঠিক তেমন মড়মড় আওয়াজ করেই ভেঙে যায়.....................

র্দীঘশ্বাস তোমার রুক্ষ দেয়াল ছুয়ে,
বিবর্ন রাত্রি কাটে বির্মুত সময়ে
প্রার্থনা তোমার হারিয়ে যায় অন্ধকারে
স্তব্ধ এ বদ্ধ ঘরে, অস্পষ্ট স্বরে,
নিঃসঙ একা তুমি,
ক্লান্ত র্জীন তুমি,
অন্ধ দেয়াল জুড়ে
দুঃস্বপ্ন আছড়ে পড়ে

মাঝে মাঝে জীবনটাকে অংকের মতো লাগে। অংকে যেমন সমীকরনের ব্যাপারটা আছে। হয়তো জীবনটাও অনেকটা ওরকম। মাঝে মাঝে জটিল কিছু সমীকরনের মধ্যে পড়ে যেতে হয়। ক্রমেই সে জিনিসগুলো জটিল থেকে জটিলতর হয়, হতেই থাকে হতেই থাকে...........একটা সময় থমকে যায়। কখনো সেটার সমাধান হয় কখন হয়না..............................
-------------------------------------

[ গান দুটা শীরোনামহীনের 'ভবঘুরে ঝড়' এবং 'নিঃসঙ' ]

কান্নার রং....

----------------------------------------------------------------------------------
আমার শহরের একটা অংশ আমি খুব ভালোবাসতাম। সেখানকার ছোট্ট একটা লেকের দিকে তাকালে আমি সমস্ত অপূর্নতা ভুলে যেতাম। যেখানকার প্রতিটা রাস্তা আমার প্রিয় ছিলো। যে রাস্তার কোন একটা অংশে আমি অপেক্ষা করতাম কোন একজনের জন্য। ধরলাম তার নাম কৃষ্ণচূড়া। একদিন কৃষ্ণচূড়া আমাকে তার কান্নার রং দেখালো, আমাকে সেখান থেকে রং চেনানোর চেষ্টা করলো। আমি কিছুই দেখলাম না, সে অনেক চেষ্টা করলো তারপর সেখান থেকে উঠে চলে গেলো। আমি প্রথমে তার চলে যাওয়া দেখলাম তারপর তাকালাম তার কান্নার ফোটাটার দিকে। হঠাত আবিস্কার করলাম আমার কয়েক ফোটা কান্না সেখানটায় গড়িয়ে পড়েছে। তখন আমি দেখলাম সে কান্নার মাঝে আশেপাশের অনেক রং ভেসে উঠেছে। ওহ!! এটাই তাহলে কান্নার রং......


আমি বুঝতে পারিনি সেটা কৃষ্ণচূড়ার সাথে শেষ দেখা ছিলো। আচ্ছা আমি তো কান্নার রং দেখতে চাইনি, তবু কেন সে আমাকে সেটা দেখলো? এটা কি তার ব্যার্থতা নাকি আমার অপূর্ণতা!!
যদিও নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী কোন কিছুই আমি পাইনি, তবুও আমি কাদতে শিখিনি। কারন আমি ওই আকাশ দেখতে জানি, আমি জানি ওই নীলের মাঝে কি লুকিয়ে আছে। এবং সেই নীলটুকু আমার মন ঠিক রাখার জন্য যথেষ্ট।
হয়তো কেউ বলতে পা্রে যখন আকাশে নীল থাকবেনা তখন কি করবো আমি? আমার উত্তর একটাই, সেটা বৃষ্টি। হ্যা বৃষ্টির প্রথম স্পর্শ আমাকে কাপিয়ে দেয় ঠিকই কিন্তু বৃষ্টি আমাকে মনে করিয়ে দেয় অনেক কিছুই। যে অনেক কিছুটা আমার মন ঠিক রাখার জন্য যথেষ্ট।

রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১০

লুকোচুরি......নিজের সাথে

-------------------------------------------


ইদানিং সবকিছুই কেমন যেন ছাড়া ছাড়া লাগছে। একটা কিছু আমার সাথে লুকোচুরি খেলছে কিন্তু সেই কিছুটা যে কি তা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা!! মাঝে মাঝে নিজেকে ১টা ঘোরের মাঝে আবিষ্কার করি, তখন মনে হয় এ ঘোর আর কখনো কাটবেনা। কিন্তু ঘোরটা কেটে যায় এবং যখন ঘোর কেটে যায় তখন আবার নিজেকে আবিষ্কার করি সেই লুকোচুরির সাথে।


ইদানিং ব্লগ এ কম আসি, সময়ের অভাবে আসা হয়না এটা ভুল, এখন আমার প্রচুর অবসর তবুও ইচ্ছে করেই কম আসি। মাঝে মাঝে ফেসবুকে যাই, কিছুক্ষন থাকি, ইচ্ছে হলে ষ্টাটাস দেই না হলে আবার বের হয়ে যাই। আমার বন্ধুদের সাথে শেষ কবে আড্ডা দিয়েছি মনে নেই, খালি মনে আছে সেটা অনেকদিন আগে। ইচ্ছে জিনিসটা সম্ভবত আমাকে বিদায় দিয়ে চলে যাচ্ছে। আমি স্পষ্টই বুঝতে পারছি আস্তে আস্তে নিজেকে আড়াল করে নিচ্ছি সবকিছুর কাছ থেকে......:|


ক্যানো জানি একা থাকতে ইদানিং খুব ভালো লাগে। কারো সাথে মিশতে ইচ্ছে করেনা। ক্লাশে যাই অনেকটা বাধ্য হয়ে। না হলে হয়তো সেখানেও যেতাম না। নিজেকে নিজে বুঝাই আর কয়েকদিন তারপর আর ক্লাসে যেতে হবেনা। কিন্তু তবুও একটা প্রশ্ন থেকে যায়, এ দিনগুলো কি কখনোই মনে পড়বেনা......?


অর্থহীনের একটা গান ঘুরেফিরে আমার কানের পাশে বাজতে থাকে


একটি ছেলের বুকে
আছে, লুকিয়ে ছিলো, অনেক না বলা কথা,
সাগর পাড়ে বসে বসে,
বালুর মাঝে আঙুল দিয়ে লিখতো সে কতো কবিতা।
ছিলো তার অনেক কিছুই, আবার কিছুই ছিলোনা
অশ্রুভরা চোখ সারাটিরাত,
বালুর মাঝে কাটাকুটি, সাথে পুরোন কিছু স্মৃতি
সুরটা এসে বসলেই হতো গান।
আকাশটা শুনতো তার সব গান
নামতো সে বৃষ্টি হয়ে,
বৃষ্টি অশ্রু মিশে একাকার
যদি ছেলেটা একটু হাসে......
সব মানুষের ব্যাস্ত ভীড়ে, দুপুরবেলার কড়া রোদে
লিখতো ছেলেটা তবু কবিতা,
বালুর মাঝে আঙুল দিয়ে, ইচ্ছেগুলো ধরতো তুলে
মনের মাঝে ছোট্ট ক্যানভাসে।
ছিলো তার অনেক কিছুই, আবার কিছুই ছিলোনা
অশ্রুভরা চোখ সারাটিদিন,
কে যেন ডাকতো তাকে, সাগরের ওপাশটাতে
দিন-রাত শুধু গান নিদ্রাহীন।
ঝাউবনটা শুনতো তার সব গান
এতো মানুষের ভীড়ে চুপটি করে,
কড়া রোদে দিতো ছায়া
যদি ছেলেটা একটু হাসে.........
তারপর হঠাত একদিন ব্যাস্ত আঙুল থামিয়ে দিয়ে
তাকালো সে সাগরে,
ছোট্ট একটি নৌকো নিয়ে, জলরঙের পাল উড়িয়ে
চললো সে অজানার পথে,
যা ছিলো যা ছিলো না
সবাই এসে সাগরপাড়ে এখন শুধু তাকে খোজে,
বালুর মাঝে আঙুল দিয়ে লেখা কবিতাগুলো
এখন শুধু তারা পড়ে।
আকাশ আর ঝাউবন তার আশায়
এখনো থাকে বসে,
মনে তাদের একটি প্রশ্ন
ছেলেটা কি এখন হাসে...............



জানিনা কেন এ গানটা খুব ভালো লাগে। মনে হয় আমার ভেতরকার সব 
কথা এটায় লেখা হয়েছে।


ইদানিং তাকেও ঠিকমতো সময় দেয়া হয়না, তার সাথে ঠিকমতো কথা হয়না। কোথাও যাওয়া হয়না তার সাথে। আমি জানি সে এগুলো নিয়ে মাঝে মাঝে রাগ করে, কিন্তু কখনো আমাকে বলেনা। যেভাবে চাচ্ছি ঠিক সেভাবেই সে আমাকে থাকতে দিচ্ছে, একটুও প্রতিবাদ করছেনা বরং আমার জন্য সে তার নিজের মধ্যে পরিবর্তন এনেছে। আমি জানি এ মানুষটাকে নানাভাবে খুব কষ্ট দিচ্ছি তবুও নিজে ঠিক হচ্ছিনা। সম্ভবত খুব স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি দিন দিন............... :|


বুঝতে পারিনা সমস্ত কিছুর লুকোচুরি কবে শেষ হবে। আমি এ লুকোচুরি খেলতে খেলতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, আর ভালো লাগছেনা।

--------------------------------------------------------