রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১০

লুকোচুরি......নিজের সাথে

-------------------------------------------


ইদানিং সবকিছুই কেমন যেন ছাড়া ছাড়া লাগছে। একটা কিছু আমার সাথে লুকোচুরি খেলছে কিন্তু সেই কিছুটা যে কি তা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা!! মাঝে মাঝে নিজেকে ১টা ঘোরের মাঝে আবিষ্কার করি, তখন মনে হয় এ ঘোর আর কখনো কাটবেনা। কিন্তু ঘোরটা কেটে যায় এবং যখন ঘোর কেটে যায় তখন আবার নিজেকে আবিষ্কার করি সেই লুকোচুরির সাথে।


ইদানিং ব্লগ এ কম আসি, সময়ের অভাবে আসা হয়না এটা ভুল, এখন আমার প্রচুর অবসর তবুও ইচ্ছে করেই কম আসি। মাঝে মাঝে ফেসবুকে যাই, কিছুক্ষন থাকি, ইচ্ছে হলে ষ্টাটাস দেই না হলে আবার বের হয়ে যাই। আমার বন্ধুদের সাথে শেষ কবে আড্ডা দিয়েছি মনে নেই, খালি মনে আছে সেটা অনেকদিন আগে। ইচ্ছে জিনিসটা সম্ভবত আমাকে বিদায় দিয়ে চলে যাচ্ছে। আমি স্পষ্টই বুঝতে পারছি আস্তে আস্তে নিজেকে আড়াল করে নিচ্ছি সবকিছুর কাছ থেকে......:|


ক্যানো জানি একা থাকতে ইদানিং খুব ভালো লাগে। কারো সাথে মিশতে ইচ্ছে করেনা। ক্লাশে যাই অনেকটা বাধ্য হয়ে। না হলে হয়তো সেখানেও যেতাম না। নিজেকে নিজে বুঝাই আর কয়েকদিন তারপর আর ক্লাসে যেতে হবেনা। কিন্তু তবুও একটা প্রশ্ন থেকে যায়, এ দিনগুলো কি কখনোই মনে পড়বেনা......?


অর্থহীনের একটা গান ঘুরেফিরে আমার কানের পাশে বাজতে থাকে


একটি ছেলের বুকে
আছে, লুকিয়ে ছিলো, অনেক না বলা কথা,
সাগর পাড়ে বসে বসে,
বালুর মাঝে আঙুল দিয়ে লিখতো সে কতো কবিতা।
ছিলো তার অনেক কিছুই, আবার কিছুই ছিলোনা
অশ্রুভরা চোখ সারাটিরাত,
বালুর মাঝে কাটাকুটি, সাথে পুরোন কিছু স্মৃতি
সুরটা এসে বসলেই হতো গান।
আকাশটা শুনতো তার সব গান
নামতো সে বৃষ্টি হয়ে,
বৃষ্টি অশ্রু মিশে একাকার
যদি ছেলেটা একটু হাসে......
সব মানুষের ব্যাস্ত ভীড়ে, দুপুরবেলার কড়া রোদে
লিখতো ছেলেটা তবু কবিতা,
বালুর মাঝে আঙুল দিয়ে, ইচ্ছেগুলো ধরতো তুলে
মনের মাঝে ছোট্ট ক্যানভাসে।
ছিলো তার অনেক কিছুই, আবার কিছুই ছিলোনা
অশ্রুভরা চোখ সারাটিদিন,
কে যেন ডাকতো তাকে, সাগরের ওপাশটাতে
দিন-রাত শুধু গান নিদ্রাহীন।
ঝাউবনটা শুনতো তার সব গান
এতো মানুষের ভীড়ে চুপটি করে,
কড়া রোদে দিতো ছায়া
যদি ছেলেটা একটু হাসে.........
তারপর হঠাত একদিন ব্যাস্ত আঙুল থামিয়ে দিয়ে
তাকালো সে সাগরে,
ছোট্ট একটি নৌকো নিয়ে, জলরঙের পাল উড়িয়ে
চললো সে অজানার পথে,
যা ছিলো যা ছিলো না
সবাই এসে সাগরপাড়ে এখন শুধু তাকে খোজে,
বালুর মাঝে আঙুল দিয়ে লেখা কবিতাগুলো
এখন শুধু তারা পড়ে।
আকাশ আর ঝাউবন তার আশায়
এখনো থাকে বসে,
মনে তাদের একটি প্রশ্ন
ছেলেটা কি এখন হাসে...............



জানিনা কেন এ গানটা খুব ভালো লাগে। মনে হয় আমার ভেতরকার সব 
কথা এটায় লেখা হয়েছে।


ইদানিং তাকেও ঠিকমতো সময় দেয়া হয়না, তার সাথে ঠিকমতো কথা হয়না। কোথাও যাওয়া হয়না তার সাথে। আমি জানি সে এগুলো নিয়ে মাঝে মাঝে রাগ করে, কিন্তু কখনো আমাকে বলেনা। যেভাবে চাচ্ছি ঠিক সেভাবেই সে আমাকে থাকতে দিচ্ছে, একটুও প্রতিবাদ করছেনা বরং আমার জন্য সে তার নিজের মধ্যে পরিবর্তন এনেছে। আমি জানি এ মানুষটাকে নানাভাবে খুব কষ্ট দিচ্ছি তবুও নিজে ঠিক হচ্ছিনা। সম্ভবত খুব স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি দিন দিন............... :|


বুঝতে পারিনা সমস্ত কিছুর লুকোচুরি কবে শেষ হবে। আমি এ লুকোচুরি খেলতে খেলতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, আর ভালো লাগছেনা।

--------------------------------------------------------